কিং লেয়ার বাংলা সামারি – King Lear Bangla Summary

কিং লেয়ার বাংলা সামারি আপনাদের সুবিধার্থে আলোচনা করা হলো। কিং লেয়ার উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের অন্যতম জনপ্রিয় একটি নাটক যার কাহিনী গ্রাম বাংলার লোকসমাজেও প্রচলিত রয়েছে।

ইংল্যান্ড নাটকটি শুরু হয়েছে বৃটেনের রাজপ্রাসাদে। এটি একটি বিয়োগান্ত্বক নাটক। নাটকটি শুরু হয় এভাবে যে ইংল্যান্ডের রাজা কিংস লেয়ার তার রাজ্য এবং সম্পদ সম্পত্তি তা তিন কন্যার মধ্যে ভাগ করে দিতে চায় কারণ তিনি বৃদ্ধ হয়ে গেছেন। রাজকার্য পরিচালনা তার আর ভালো লাগেনা। কিন্তু সম্পদ ভাগ করার ক্ষেত্রে তিনি একটি কৌশল অবলম্বন করতে চান। তিনি পরীক্ষা করে দেখতে চান যে তার কন্যাদের মধ্যে কে তাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে এবং কে তাকে সবচেয়ে কম ভালোবাসে।

সেই অনুপাতে তিনি তার রাজত্ব তারপর অন্যদের মধ্যে ভাগ করে দিবেন। সেই ঘোষণা অনুযায়ী রাজা তার কন্যাদের কাছে গিয়ে এক এক করে জিজ্ঞেস করতে লাগলেন যে তারা রাজাকে কতটা ভালোবাসে।

স্বাভাবিকভাবেই তার প্রথম কন্যা গণেরীল উত্তর দিল যে সে তাকে প্রচন্ড ভালোবাসে এবং সম্পদ পাওয়ার লোভে যতটুকু তোষামোদ করা দরকার সবকিছুই করল সে। দ্বিতীয় কন্যা রিগান ও ঠিক তার বড় বোনের মতই উত্তর দিল এবং তার বড় বোনের মতোই প্রচুর সম্পদ পেল।

কিন্তু সমস্যা গিয়ে দাঁড়ালো তার ছোট কন্যা কর্ডেলিয়ার ক্ষেত্রে। কর্ডেলিয়া রাজাকে কতটুকু ভালবাসে এমন প্রশ্নের উত্তরে সে বলল যে বাবা তুমি আমাকে লালন-পালন করেছ এবং আমাকে বড় করে তুলেছ। এজন্য আমি তোমাকে যথেষ্ট ভালোবাসি। কিন্তু বাবা হিসেবে তুমি আমার কাছ থেকে ঠিক যতোটুকু ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য ততটাই ভালোবাসি আমি তোমাকে। এর থেকে একটু কম কিংবা একটুও বেশি ভালবাসি না।

Hand Notes: King Lear

রাজার ছোট মেয়ের এমন উত্তরে প্রচন্ড রাগ হলো এবং রাজা তার ছোট মেয়েকে সম্পত্তির উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করল। কিন্তু ফ্রান্সের রাজা অন্যদিকে এই ঘটনা শুনে একটু আশ্চর্য হলেন এবং সিদ্ধান্ত নিলেন যে যে মেয়ে তার বাবার প্রশ্নের এমন কৌশলী উত্তর দিতে পারে সে মেয়ে নিশ্চয়ই অনেক বুদ্ধিমতী। সুতরাং শুধু অর্থের বিচারে না হলেও তার বুদ্ধিমত্তার বিচারে তাকে আমি বিয়ে করবো। তারপর ফ্রান্সের রাজা করডেলিয়াকে বিয়ে করল এবং ফ্রান্সে নিয়ে চলে গেল। 

অন্যদিকে রাজার এই সিদ্ধান্ত এর বিরুদ্ধে মতামত দিয়ে আসছিল কেন্ট নামক এক সভাসদ। কিন্তু রাজা তার সিদ্ধান্তে অটল ছিল। বরং রাজার বিরুদ্ধে বেশি বোঝার জন্য কেন্টকে নির্বাসনে পাঠিয়ে দেয়া হলো। কেন্ট নির্বাচনে না গিয়ে ছদ্মবেশ ধরে সেই এলাকায় নতুন নাম নিয়ে থেকে গেল। 

King Lear: Themes Character and Analysis

এরপর রাজা তার দুই মেয়ে রিগান ও গনেরিল এর মধ্যে সিংহাসন সমান ভাগে ভাগ করে দিলেন এবং সিদ্ধান্ত নিলেন যে যেহেতু তিনি রাজকার্য থেকে অবসর নিয়েছেন সেহেতু দুই মেয়ের বাড়িতে পর্যায়ক্রমে কিছুদিন করে গিয়ে থাকবেন। এভাবেই চলতে থাকলো আর রাজকার্য। কিন্তু কিছুদিন পর রাজার দুই মেয়ে তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা শুরু করল। রাজা প্রায় 100 জন সভাসদ নিয়ে দুই মেয়ের বাড়িতে পর্যায়ক্রমে থাকতেন। কয়েকদিন যেতে না যেতেই তার দুই মেয়ে তাকে বলল যে বাবা তোমার এত বেশি সভাসদ নিয়ে থাকার কি দরকার। 

এভাবে রাজাকে বুঝিয়ে রাজার সভাসদ আস্তে আস্তে কমাতে কমাতে একজনে নিয়ে চলে আসলো এবং রাজাকে বলল যে তোমার কোন সভাসদ দরকার নেই বরং আমাদের রাজসভায় যারা রয়েছে তারাই তোমার সেবা-শুশ্রূষা করে দেবে।

King Lear: English Summary

রাজা প্রথম দিকে দৃঢ় ছিলেন যে তিনি তার সিদ্ধান্তে অটল থাকবেন কিন্তু পরবর্তীতে দেখতে পেলেন যে তার কোন মেয়েই তাকে গ্রহণ করছে না। তাই উপায় না পেয়ে তিনি তার দুই মেয়ের বাড়ি থেকে বের হয়ে চলে আসলেন। 

এদিকে অন্য আরেকটি ঘটনা ঘটলো গ্লাউডসেস্টার এর পরিবারে। গার্লস সিস্টারের রয়েছে দুই ছেলে যাদের একজনের নাম এডগার এবং আরেকজনের নাম এড মান্ড। এডগার তার বৈধ সন্তান এবং এডমান্ড তার অবৈধ সন্তান। এডমন্ড ভাবলেন যে তার বাবার সমস্ত সম্পদ এবং সম্পত্তি বৈধ সন্তান হিসেবে এডগার পাবে। তার বাবার অবৈধ সন্তান এডমান্ড কোন সম্পদ পাবে না। এজন্য তিনি গ্লাউসেস্টার কে বোঝাতে শুরু করলেন যে এডগার তার সমস্ত সম্পত্তি দখল করতে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করছে।

এডগার যখন এই ব্যাপারটা বুঝতে পারলেন তখন তিনি নিজের আত্মরক্ষার স্বার্থে ডিসগাইস ধারণ করলেন এবং নিজেকে অন্য নামে সকলের সামনে তুলে ধরতে থাকলেন। নাম নিলেন পর্টাম।

অন্যদিকে যখন কিং লেয়ার বিপর্যস্ত অবস্থায় তার কর্নাদের কাছ থেকে প্রত্যাক্ষিত হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন তখন গ্লাউসেস্টার এই ব্যাপারটা জানতে পারেন। জানতে পেরে রাজাকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসেন যা এডমন্ড এর মাধ্যমে রাজার কন্যাদের কাছে প্রকাশ হয়ে যায়।

এজন্য কিং লেয়ারের দুই কন্যা ষড়যন্ত্র করে গ্লাউ সেস্টার কে ধরে নিয়ে গিয়ে অন্ধ করে রাস্তায় ফেলে দিয়ে চলে যান। এরপর পর্টাম নাম ধারণকারী গ্লাউসেস্টারের বৈধ সন্তান এডগার তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ডোভারের দিকে রওনা দেন যেখানে কিংলেয়ার অবস্থান করছিল। 

রাজার ছোট মেয়ে কর্ডেলিয়া যখন জানতে পারলেন যে তার বড় দুই বোন তার পিতার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে তখন তিনি ফ্রেন্স বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে ব্রিটেন আক্রমণ করতে রওনা দিলেন। কিন্তু পথে মধ্যে দেখা হয়ে গেল ডোভারে রাজার সাথে। সেখানে কর্ডডিলিয়া তার বাবাকে সেবা সশ্রূষা করে সুস্থ করে তোলেন এবং তার বাবা কিং লেয়ার বুঝতে পারেন যে তিনি কত বড় ভুল করেছেন তার ছোট কন্যাকে সিংহাসন থেকে বিতাড়িত করে।

পরবর্তীতে সুস্থ হয়ে কিংলেয়ার তার কন্যার নেতৃত্বে ব্রিটেন আক্রমণ করার জন্য ফ্রান্সের বাহিনীর সাথে সামনের দিকে অগ্রসর হন। 

এদিকে বৃটেনে গণে রিল তার স্বামীকে বাদ দিয়ে অ্যাডমান্ড এর সাথে অবৈধ সম্পর্ক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। ফলে গণেরীল তার স্বামীকে প্রধান সেনাপতির পথ থেকে সরিয়ে এডমন্ড কে স্থলাভিষিক্ত করেন। এরপর করডেলিয়ার বাহিনী এবং এডমন্ড এর বাহিনীর সাথে তুমুল যুদ্ধ হয় এবং যুদ্ধে ফ্রেনস বাহিনী পরাজিত হয়। 

ফলে কিং লিয়ার এবং তার ছোটকন্যা কর্ডলিয়া ব্রিটেনের রাজ বাহিনীর হাতে বন্দি হন এবং ফাঁসির নির্দেশ দেয়া হয় কর্ডেলিয়া কে। এরপর এডগার এবং এডমিন এর মধ্যে একটা যুদ্ধ হয় যেখানে এডমন্ড মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন এবং মৃত্যুর পূর্বে তিনি তার দোষ স্বীকার করেন। অন্যদিকে দেখা যায় যে গনেরিল রিগানকে বিষ দিয়ে হত্যা করে এবং সে নিজেও আত্মহত্যা করে। কোর্ডেলিয়াকে যেহেতু ফাঁসির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তাই তাকে ফাঁসি দেওয়া হয় এবং তার লাশ জড়িয়ে ধরে কিং লেয়ার নিজেও মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। 

এভাবে ব্যথিত ঘটনার মধ্য দিয়ে শেক্সপিয়ারের কিং লেয়ার নাটকটির সমাপ্তি ঘটে। লেখাটি সহজেই খুঁজে পেতে আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন এবং যদি কোন জিজ্ঞাসা থাকে তবে তা আমাদের ফেসবুক গ্রুপে করতে ভুলবেন না। 

Ruhul Amin
Ruhul Amin

This is Ruhul Amin, working and researching for English literature to make it discovered and available to the world.

Articles: 126

Leave a Reply