Othello Bangla Summary – ওথেলো বাংলা সামারি

ওথেলো শেক্সপিয়ারের একটি বিখ্যাত ট্রাজেডি। সামারির শুরুতেই আমাদের জেনে রাখা ভালো যে এই নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র ওথেলো এবং ডেস ডেমনা যারা দুজনে একে অপরের প্রতি মুগ্ধ হয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। এই নাটকে ইয়াগো একটি অন্যতম চরিত্র যার কারণেই ওথেলো ট্রাজিক পরিস্থিতি শিকার হয়। 

এর কারণ হলো ওথেলো ইয়াগোকে উপেক্ষা করে ওথেলো মাইকেল ক্যাসিও নামক এক ব্যক্তিকে সামরিক বাহিনীতে পদোন্নতি প্রদান করেছেন। আর এই অপমানের প্রতিশোধ নিতেই ইয়াগো ওথেলোর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে নাটকটিকে ট্রাজিক ড্রামাতে পরিণত করেছে। 

Othello Bangla Summary – ওথেলো বাংলা সামারি

নাটকটি শুরু হয় ভেনিসের একটি রাস্তায় যেখানে দুইজন চরিত্র কথা বলছিল যার একজন হলেন ইয়াগো এবং আরেকজন হলেন রদ্রীগো। রদ রিগো ভেনিসের একজন নামকরা ব্যবসায়ী যার টাকা পয়সা ও ধন দৌলতের কোন অভাব নেই। সে ডেসডেমনা অর্থাৎ নাটকের নায়িকা কে খুব পছন্দ করে এবং সে তাকে বিয়ে করতে চায়। আর এই প্রস্তাব সে বরাবরই পাঠাতে থাকে ইয়াগো চরিত্রের মাধ্যমে। 

ইয়াগো কে অনেক টাকা পয়সা ও বিভিন্ন উপহার দিত এবং সেগুলো রদরিগো ডেস ডেমনার কাছে পাঠাতে বলত। কিন্তু ইয়াগো এতটাই ধূর্ত চরিত্রের অধিকারী যে সে এই উপহারগুলোর ডেস ডোমনাকে তো দিতোই না বরং সেগুলো সে নিজের কাছে রেখে দিত।

আজকের দিনে এসে সে রদ্রিগো কে বলছে যে ওথেলো ডেসডেমনা কে বিয়ে করে নিয়েছে। ঘটনা এখানেই শেষ নয় বর ং অথেলের সাথে তার নিজেরও শত্রুতা রয়েছে। তাই সে রদ্রিগোকে বিভিন্ন কথাবার্তা বলে উত্তেজিত করা শুরু করল যে আমরা যদি ষড়যন্ত্র করে তাদের সংসারে ভাঙ্গন ধরাতে পারি তাহলে আমার প্রতিশোধ নেয়া হবে এবং তুমি তোমার প্রাণের প্রিয়সি কে পেয়ে যাবে।

More: Othello Notes

এটা শুনে তারা দুইজন পরিকল্পনা করল যে ওথেলো যে ডেসডেমনা কে বিয়ে করেছে এটা ডেসডেমনার বাবা ব্রাবান শিও  জানেনা। তারা ডেসডেমনার বাবার কাছে যাবে এবং এই ব্যাপারটা তাকে জানাবে।

পরিকল্পনা মত তারা দুজনে ব্রাবনসিওর বাড়ির সামনে গেল এবং চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করলো। 

শুরুর দিকে ব্রাবানজিও তাদের কথা বিশ্বাস না করলেও পড়ে গিয়ে দেখে যে তার মেয়ে ডেসডেমনা ঘরে নেই। এখানে জেনে রাখা ভালো যে নাটকের মূল চরিত্র ওথেলো এর জীবন বিভিন্ন যুদ্ধ-বিগ্রহ এবং সংগ্রামী পরিপূর্ণ। ওথেলো তার যুদ্ধের বীরত্বপূর্ণ কাহিনী গুলো ব্রাবানজিওের বাড়িতে এসে ব্রাবানজিও ও তার মেয়েকে শোনাতেন এবং তারা আনন্দ পেতেন। 

সবকিছু জানতে পেরে ব্রাবানজিও যখন কিছু লোকজন সাথে নিয়ে ওথেলোের বাড়ির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তখন অন্য দিক থেকে ইয়াগো তার বিশ্বাস ধরে রাখার জন্য ওথেলোের পাশে গিয়ে বসেন। ওথেলো দেখতে পেল যে অনেক লোকজন জড়ো হয়ে তার বাড়ির দিকে এগিয়ে আসছে।

এ সময় ওথেলো তরবারি বের করলেন কিন্তু হঠাৎ করে দেখতে পেলেন যে তার উদ্দেশ্যে ডিউক অফ ভেনিস একটি পত্র পাঠিয়েছেন যেখানে তাকে যত দ্রুত সম্ভব ডিউকের দরবারে উপস্থিত হওয়ার জন্য আদেশ দেওয়া হয়েছে। ব্রাবানজিও যখন ওথেলোের সামনে এসে ঝগড়ার মত একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে লাগলেন তখন ওথেলো ব্রাবানজিওকে বললেন যে ডিউক অফ ভেনিস তাকে যেতে বলেছেন।

তখন ব্রাবানজিও এবং ওথেলো দুজনেই ডিউকের দরবারে গেলেন এবং ব্রাবানজিও ডিউক এর কাছে বিচার দিলেন যে ওথেলো তার মেয়ে ডেসডেমনাকে যাদু মন্ত্র করে বিয়ে করেছে।

অন্যদিকে ওথেলো ডিউকের কাছে আত্মপক্ষ সমর্থনের অনুমতি নিয়ে বললেন যে আমি আমার যুদ্ধের সংগ্রামী গল্পগুলো ডেসডেমনাকে শোনাতাম এবং সে এগুলোর প্রেমে পড়ে আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। আমিও তার প্রস্তাবে সারা দিয়ে তার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হই।

এদিকে ডেসডেমনা ডিউকের দরবারে এসে ওথেলোের কথাকে সমর্থন জানায় এবং ডিউক ব্রাবানজিওকে বুঝিয়ে শুনিয়ে এই ব্যাপারটা এখানেই মিটিয়ে দেয়। তারপর ডিউক ওথেলোকে বলে যে তাকে এখনই যুদ্ধে যেতে হবে কারণ তাররকিস বাহিনী তার রাজ্য আক্রমণ করেছে। 

অন্যদিকে ডেসডেমনা এখানে বেঁকে বসে যে সে যেহেতু ওথেলোের অ্যাডভেঞ্চারাস লাইফের প্রেমে পড়ে তাকে বিয়ে করেছে তাই সে ওথেলোের সাথে যেতে চায় এই জীবনটাকে খুব কাছে থেকে দেখার জন্য। এবং সে তার বাবা ব্রাবানজিও কে বলে যে আমার মা যেমন তোমার প্রতি অনুগত তেমনি আমি আমার স্বামী ওথেলোের প্রতি অনুগত। এরপর ঠিক হলো যে ডেসডেমনা আগে অন্য একটি জাহাজে করে যাবে এবং পরবর্তীতে আরেকটি জাহাজে করে ওথেলো যুদ্ধে রওনা দিবে। কিন্তু সেখানে গিয়ে ঘটনা অন্যদিকে মোর নিল।

More: Hamlet Notes

যুদ্ধে গিয়ে জানা গেল যে সাইপ্রাস বাহিনী ঝরের কবলে পড়ে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে এবং তাদের আক্রমণ করার মত আর কোনো সক্ষমতা নেই। এই বিজয় উদযাপন করতে বিশাল একটি পার্টির আয়োজন করা হলো যেখানে ওথেলোের যে লেফটেন্যান্ট ছিল ক্যাসিও তাকে ইয়াগো মদ্যপ অবস্থায় উত্তেজিত করে তুললেন। ফলে ক্যাসিও ইয়াগো কে তাড়া করল এবং ঘটনাক্রমে দৌড়ে গিয়ে ওথেলোের সামনে দাঁড়িয়ে পড়ল।

ওথেলো এটা দেখে ক্যাসিওকে তার পদ থেকে অপসারিত করলেন কারণ এরকম একটা গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে এরকম আচরণ কোনভাবেই কাম্য নয়। যদিও এই ব্যাপারটা ছিল অত্যন্ত ক্ষুদ্র একটি ব্যাপার। ইয়াগো তখন ক্যাসিওকে বললেন যে বন্ধু তুমি একটা কাজ কর। তুমি যদি ওথেলোের স্ত্রী ডেসডেমনাকে গিয়ে একটু ভালোভাবে বলতে পারো তাহলে হয়তো তুমি তোমার পদ ফিরে পাবে। 

অন্যদিকে ইয়াগো পরিকল্পনা করল যে ক্যাসিও যখন ডেসডেমনার কাছে যাবে তখন সে ওথেলোের কানে বিষ ঢালবে যে তাদের মধ্যে একটি অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। ক্যাসিও যখন এবং যতবার ডেসডেমনার সাথে দেখা করেছে ততবারই ইয়াগো ওথেলোকে পর্দার আড়ালে রেখে তার কানে বিষ ঢেলেছে যাতে ওথেলো বিশ্বাস করে যে ইয়াগো কখনই মিথ্যা কথা বলতে পারে না। পরিশেষে ইয়াগো ওথেলো কে বিশ্বাস করাতে রাজি হয় যে ডেসডেমনা একজন চরিত্রহীন মহিলা এবং সে ওথেলোের বিশ্বাসযোগ্য নয়।

এসব বিষয় জানতে পেরে ওথেলো একদিন বিষন্ন অবস্থায় বসে ছিল এবং ডেসডেমনা তার কাছে গিয়ে তার বিষন্নতার কারণ জিজ্ঞেস করলে ওথেলো কোন উত্তর দেয়নি। ডেসডেমনা তার হাতে থাকা রুমাল দিয়ে ওথেলোের মুখের ঘাম মুছে দিতে চেয়েছে কিন্তু ওথেলো ঝাটকা দিয়ে সেটা ফেলে দিয়েছে। দুর্ভাগ্যক্রমে এই রুমাল চলে যায় এমিলিয়া অর্থাৎ ইয়াঘর স্ত্রীর হাতে। ইয়াগো তখন মনে মনে বুঝে ফেলে যে তার পরিকল্পনা এখন সফল হতে চলেছে। 

একদিন ডেসডেমনা এবং ক্যাসিও কথা বলছিল যে কিভাবে ক্যাসিও কে তার পূর্বের পদে বহাল করা যায় এই ব্যাপারটি নিয়ে। কিন্তু ইয়াগো ওথেলোকে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাদের আলোচনা দেখিয়ে দিয়ে বললেন যে দেখেন কিভাবে এরা দুইজন একে অপরের প্রতি প্রেম নিবেদন করছে। এমনকি ইয়াগো ভৌনিতা করেও অভিনয় করে এমন ভাবে ওথেলোের কাছে এই বিষয়টি বললেন যাতে ওথেলো ইয়াগো কে কোনভাবেই অবিশ্বাস করতে না পারে।। ইয়াগো এটাও বললেন যে ওথেলো ও ডেসডেমনার ভালবাসার প্রথম যে উপহার রুমাল সেটা দিয়ে ডেসডেমনা ক্যাসিওকে ঘাম মুছে দিয়েছেন এটা ইয়াগো দেখতে পেয়েছেন।

এগুলো র বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে ইয়াগো বারবার ওথেলোকে বলছিল যে থাক এসব ব্যাপার তুলে আমি আপনাকে ব্যথিত করতে চাই না। ইয়াগুর প্রচুর চেষ্টার ফলে ওথেলো একসময় বিশ্বাস করে ফেলল যে সে ডেসডেমনার কাছ থেকে প্রতারিত হয়েছে। 

এ সময় আমরা একটি সলিলোকিউ দেখতে পাবো অর্থাৎ ওথেলো নিজে নিজে মনে মনে কথা বলছে ডেসডেমনাকে হত্যা করার পূর্বে। সে বলছে যে আমি ডেসডেমনাকে হত্যা করব এই কারণে নয় যে তার সাথে আমার শত্রুতা রয়েছে। আমি প্রথমে ডেসডেমনার ঘরের ভেতরে যাব এবং বাতি নিভিয়ে দেব আর তারপর তাকে হত্যা করব। তাকে হত্যা করার কারণ হলো যাতে আর কেউ ডেসডেমনার প্রতারণার শিকার না হয়।

পূর্ব পরিকল্পনা মত ওথেলো ডেসডেমনাকে গিয়ে হত্যা করল এবং বেল চেপে সবাইকে বলে দিল যে সে ডেসডেমনাকে হত্যা করেছে যে ছিল একজন বিশ্বাসঘাতকনী।

তখন এমিলিয়া ওথেলোের ভুল ভেঙ্গে দিয়ে বলল যে এই রুমাল আসলে সে পেয়েছিল এবং ডেসডেমনা কখনোই ওথেলোের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেনি। বরং এই যে ষড়যন্ত্র এর সব কিছুর মূলে ছিল ইয়াগো। 

এই ঘটনা জানতে পেরে ওথেলো খুব মর্মাহত হয় এবং নিজের কাছে থাকা একটি ছুরি দিয়ে সে নিজেকে আঘাত করে মারা যায়। অন্যদিকে ক্যাসিও এবং ই য়াগো দুইজন দুইজনকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে দুজনেই মৃত্যুবরণ করে।

এভাবেই শেষ হয় ওথেলো নাটকটি। 

Ruhul Amin
Ruhul Amin

This is Ruhul Amin, working and researching for English literature to make it discovered and available to the world.

Articles: 126

Leave a Reply